ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ০৮ মে ২০২৫ , ২৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিতর্কিত কমিশনের রিপোর্ট বাতিল করে কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে।

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট সময় : ২০২৫-০৫-০৭ ১৮:১০:১৭
বিতর্কিত কমিশনের রিপোর্ট বাতিল করে কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে। বিতর্কিত কমিশনের রিপোর্ট বাতিল করে কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে।



নিজস্ব প্রতিবেদক

নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন বিতর্ক ও আলোচনা শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তরা, যৌন পেশাকে স্বীকৃতি দেয়ার সুপারিশ সকল ধর্মের বিরোধী - বলে অভিহিত করেন।


বক্তরা নারী কমিশনের প্রস্তাবিত রিপোর্টের বিভিন্ন অসঙ্গতি এবং বিতর্কিত অধ্যায়গুলো নিয়ে আলোচনা করেন।  বুধবার (০৭ মে) ওয়ান ইনিশিয়েটিভ রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট কর্তৃক আয়োজিত ‘নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন বিতর্ক ও আলোচনা শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক’ জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে অনুষ্ঠিত হয়। 


ওয়ান ইনিশিয়েটিভ রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্টের চেয়ারম্যান মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুর রবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গোলটেবিল বৈঠকের বিষয়বস্তুর আলোচনা ও বক্তাদের বক্তব্যের বিষয়সহ নারী কমিশনের বিতর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে সার্বিক মূল্যায়ন করে বাংলাদেশ


জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি ড. এইচ.এম হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, কমিশনের এসব সুপারিশ নিয়ে পাল্টাপাল্টি অবস্থান তৈরি হয়েছে। এসব সুপারিশে আপত্তি জানিয়ে নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিলের আহবান জানিয়ে


তিনি আরো বলেন, অভিন্ন পারিবারিক আইনের মাধ্যমে সব ধর্মের নারীকে সমান অধিকার, উত্তরাধিকার আইনে সমান অধিকার এবং শ্রম আইনে যৌনকর্মীদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে, যা একবারে অযৌক্তিক। এই সুপারিশ বাস্তবায়ন হলে সামাজিক অপরাধ বৃদ্ধি পাবে। তাই এই সুপারিশ বাতিল করে নতুনভাবে নারী সংস্কার কমিশন গঠন করতে তিনি অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। 


বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, প্রতিবেদনে নারীর প্রতি বৈষম্য দূর করার নামে মুসলিম, হিন্দু ও খ্রিষ্টান পারিবারিক আইনের সংস্কার করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এসব আইনের পরিবর্তে অভিন্ন পারিবারিক আইনের মাধ্যমে সব ধর্মের নারীর জন্য বিয়ে, তালাক ও সন্তানের ভরণপোষণে সমান অধিকার নিশ্চিত করার জন্য অধ্যাদেশ জারি করার সুপারিশের পাশাপাশি সব সম্প্রদায়ের জন্য আইনটিকে ঐচ্ছিক রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া উত্তরাধিকার আইন সংশোধন করে মুসলিম ও অন্যান্য ধর্মীয় উত্তরাধিকার আইন সংশোধন করে সম্পদে নারীর ৫০ শতাংশ নিশ্চিত করার সুপারিশ করেছে কমিশন। যেটা নারীর অধিকারের নামে নারীর উপর উল্টো চাপ সৃষ্টি হবে। 


তিনি আরো বলেন, পতিতাবৃত্তিকে শ্রমিকের স্বীকৃতির সুপারিশ করা হয়েছে, যা একজন নারীকে পৈশাচিক পুরুষের কাছে আরো নগণ্য করে তুলবে। নারীর মর্যাদা ক্ষুন্ন হবে। জিনাহ, ব্যভিচার, অনাচার বৃদ্ধি পাবে। সমাজে শান্তির পরিবর্তে অশান্তি বিরাজ করবে। অনতিবিলম্বে নারী সংস্কার কমিশনের সুপারিশ প্রত্যাখান করে নতুনভাবে একটি কমিশন গঠন করতে তিনি অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। 


বাংলাদেশ ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. আব্দুল মান্নানের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত গোলটেবিল বৈঠকে আরো বক্তব্য রাখেন, সম্মিলিত নারী প্রয়াসের সেক্রেটারি অধ্যাপক ড. ফেরদৌসী আরা খানম, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, আইপাস বাংলাদেশের সিনিয়র অ্যাডভাইজর ডা. শামিলা নাহার, অ্যাডভোকেট সাবিকুন নাহার মুন্নি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম বিভাগের অধ্যাপক আরিফুর রহমান অপু, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. শামীমা তাসনীম, বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের গাইনি বিভাগের অধ্যাপক ডা. শাহীন আরা আনোয়ারী, বাংলাদেশ মসজিদ মিশনের মহাসচিব ড. খলিলুর রহমান মাদানী, আয়নাঘরে দীর্ঘদিন নির্যাতিত লে. কর্নেল (অব.) হাসিনুর রহমান বীরপ্রতীক, সম্মিলিত নারী প্রয়াসের অ্যাসিসটেন্ট সেক্রেটারি হাসিনা মমতাজ মারিয়া, মাসজিদুল জুমা কমপ্লেক্সের খতিব মাওলানা আবদুল হাই মো. সাইফুল্লাহ, মানারাত ইন্টারন্যাশন্যাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক মুহাম্মদ আবদুস সামাদ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. এম আবদুল হান্নান, বুয়েটের ন্যানো ম্যাটেরিয়ালস এবং সিরামিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ফকরুল ইসলাম প্রমুখ।
 

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আব্দুর রব বলেন, নারী কমিশনের প্রস্তাবিত প্রতিবেদন নারী-পুরুষের অধিকারে হস্তক্ষেপ। পতিতাবৃত্তির কুপ্রভাব নিয়ে বহুমুখী বিশ্লেষণ করে তিনি, এই জাতি বিনাসী প্রতিবেদনটি প্রত্যাখ্যান করার জন্য অন্তর্র্বতী সরকারের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, নারী সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন শুধু ধর্মের উপর আঘাত আনেনি বরং নারীর মর্যাদাও ক্ষুন্ন করেছে।



 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Alo News Admin

কমেন্ট বক্স

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ